সজনে পাতার গুড়ার পুষ্টিগুণ-সজনে পাতার উপকারিতা।
সজনে পাতার গুড়ার পুষ্টিগুণ ও সজনে পাতার গুড়ার উপকারিতা নিয়ে আজ আলোচনা করবো। সজনে পাতার ইংরেজি নাম হলো Drumstick এবং বৈজ্ঞানিক নাম Moringa Oleifera।
সজনে পাতার গুড়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা অনেক। এই জন্য দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীরা সজনে গাছকে ‘Miracle Tree’ বা ‘অত্যাশ্চর্য বৃক্ষ’ বলে অভিহিত করে থাকেন।
বাংলাদেশে সজনে ডাটা ও সজনে শাক খাবার হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। তবে একে শুধুমাত্র সবজি হিসেবে বিবেচনা করলে ভুল করবেন।
সজনে পাতার আছে নানারকমের ঔষধি গুণও, যার জন্য একে বলা হয় ‘Natural Multi Vitamin Plant’। এটি মুলত একটি সুপার ফুড।
গবেষকরা সজনে পাতা ও ডাটাকে বলে থাকেন নিউট্রিশন্স সুপার ফুড এবং সজনে গাছকে বলা হয় মিরাকেল ট্রি। কারণ এটি শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। সজনে পাতার গুড়ো কে মরিংগা গুড়োও বলে।
মরিংগা গুড়ো দিয়ে বানানো শরবত নিয়মিত খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং শরীর আগের থেকে অনেক স্বাস্থ্যবান এবং শুস্রী দেখাবে।
সজনে পাতা/মরিংগা গুড়োর পুষ্টিগুণঃ
প্রতি গ্রাম সজনের পাতা কমলার চেয়ে সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি, দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, দুই গুণ বেশি প্রোটিন, গাজরের চেয়ে চার গুণ বেশি ভিটামিন এ এবং কলার চেয়ে তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম সরবরাহ করে।
এই কারণে, এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতা এবং বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি থেকে সৃষ্ট রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সজনে পাতা/মরিংগা গুড়োর উপকারিতা:
সজনের পাতা সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য যা আপনাকে অবাক করবে:
১) সজনের পাতায় কমলার তুলনায় সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে।
২) দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম এবং দুই গুণ বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়।
৩) গাজরের তুলনায় চার গুণ বেশি ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
৪) কলার তুলনায় তিন গুণ বেশি পটাশিয়াম রয়েছে।
জেনে নিন আরও কিছু অবাক করার মতো গুণ:
- সজনের পাতা আর্সেনিকমুক্ত পানি তৈরিতে সহায়তা করে।
- এটি হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী, উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- এক টেবিল চামচ শুকনো সজনের পাতা গুঁড়া ১-২ বছর বয়সী শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় ১৪% প্রোটিন, ৪০% ক্যালসিয়াম এবং ২৩% আয়রন ও ভিটামিন এ সরবরাহ করতে পারে।
- প্রতিদিন ছয় চামচ সজনের পাতার গুঁড়া গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মায়ের ক্যালসিয়াম ও আয়রনের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম।
- সজনের পাতা বহুমূত্র রোগে উপকারী এবং এলার্জি হলে প্রলেপ দিলে আরাম পাওয়া যায়।
- প্রতিদিন সকালে এক চামচ শুকনো গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে পেটের প্রদাহ ও গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- গেঁটেবাতের সমস্যা হলে সজনের পাতা বেটে লাগালে ব্যথা কমে।
- সজনের ফুল হজম শক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
- পোকার কামড়ে তাৎক্ষণিকভাবে এন্টিসেপ্টিক হিসেবে কাজ করে।
- সজনের পাতা ক্রিমিনাশক হিসেবে কার্যকরী, ক্রিমি হলে পাতা গুঁড়া করে খেতে পারেন।
- এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখে।
- হাড়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং যকৃত ও কিডনির কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীর সুস্থ রাখে এবং বুকের দুধের পরিমাণ বাড়ায়।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে, তাই ব্যায়ামের পাশাপাশি সজনের পাতা গ্রহণ করতে পারেন।
সজনে পাতার গুড়া কিভাবে খাবেন?
শুকনো সজনের পাতা গুঁড়া যে কোনো স্যুপে মেশালে খাদ্যমান বেড়ে যায়। এছাড়া রঙ চা বা কফির সাথে বা কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে সজনের পাতা গুঁড়া খেতে পারেন। অনেকে মধুর সাথে মিশিয়েও খায়। মোট কথা আপনি যেভাবে ইজি ফিল করেন সেভাবেই খাবেন।
সজনে পাতার গুড়ার অপকারিতা:
শজনে পাতার অনেক উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত গ্রহণে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত শজনে পাতা খেলে বমিভাব, পেটের সমস্যা, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এছাড়া, যারা ব্লাড প্রেসারের ওষুধ গ্রহণ করছেন, তারা নিয়মিত শজনে পাতার গুঁড়া বা রস খেলে ব্লাড প্রেসার অতিরিক্তভাবে কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।
পোস্ট ট্যাগ: সজনে পাতা, সজনে পাতার গুড়ার উপকারিতা, সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম, সজনে পাতার গুড়ার অপকারিতা, সজনে পাতার গুড়ার পুষ্টিগুণ, সজনে গুড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, মরিংগা গুড়া/পাউডারের উপকারিতা ও অপকারিতা,
শেষকথা
সজনে পাতার গুড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, এবং সজনে পাতার গুড়া কিভাবে খাবেন সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। আশা করি সজনে পাতার গুড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে একটা ধারনা দিতে পেরেছি। তাই সজনে পাতার গুড়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতার কথা চিন্তা করে এটি নিয়মিত গ্রহণ করা উচিত।
বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url