ভিটামিন সি এর ৫ টি উৎস। ভিটামিন সি এর অভাবে যে ১০ টি রোগ হয় জানুন।

বন্ধুরা আমরা আজ জানবো ভিটামিন-সি এর উৎস কি, ভিটামিন-সি এর অভাবে কি কি রোগ হয়?? অনেকেই হয়তো জানিনা। তাই আজ আমরা জানবো ভিটামিন-সি কি, ভিটামিন-সি এর উৎস গুলো কি কি এবং ভিটামিন-সি এর অভাবে কি কি রোগ হতে পারে। 

ভিটামিন-সি এর অভাবে যে ১০ টি রোগ হয়

ভিটামিন সি এর ৫ টি উৎস

ভিটামিন সি, যার রাসায়নিক নাম অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, এটি একটি জলে দ্রবণীয় ভিটামিন যা শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার মধ্যে রয়েছে কোলাজেন গঠন, ক্ষত নিরাময় এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা।  মানব শরীর ভিটামিন সি তৈরি করতে পারে না, তাই এটি খাদ্য থেকে প্রাপ্ত করা আবশ্যক। বেঁচে থাকার জন্য মানুষের ভিটামিন সি অবশ্যই খাওয়া উচিত।  

এখানে প্রয়োজনীয় তথ্য সহ ভিটামিন সি এর কিছু উত্সের বর্ণনা করা হলো:

১. সাইট্রাস ফল: 

সাইট্রাস ফল যেমন কমলা, আঙ্গুর, লেবু মাল্টা, এবং জামবুরা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। একটি কমলা প্রায় আমাদের শরীরের দৈনিক চাহিদার ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি সরবরাহ করে, যা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক চাহিদার প্রায় ৭৮%।

২. বেরি:

স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি এবং ব্লুবেরির মতো ফলগুলো ভিটামিন সি-এর চমতকার উৎস৷ এক কাপ স্ট্রবেরি প্রায় ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি সরবরাহ করে, যা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রস্তাবিত দৈনিক শারীরিক চাহিদার প্রায় ৯৪%।

৩. কিউই ফল:

কিউই ফল হল ভিটামিন সি-এর আরেকটি চমৎকার উৎস। একটি মাঝারি কিউই প্রায় ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি সরবরাহ করে, যা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রস্তাবিত দৈনিক খাওয়ার প্রায় ৭৮%।

৪. পেঁপে: 

পেঁপে একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ফল যা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। একটি মাঝারি পেঁপে প্রায় ৯৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি সরবরাহ করে, যা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রস্তাবিত দৈনিক খাওয়ার প্রায় ১০৬%।

৫. বেল মরিচ: 

বেল মরিচ, বিশেষ করে লাল এবং হলুদ জাত, ভিটামিন সি-এর চমৎকার উৎস। একটি মাঝারি লাল বেল মরিচ প্রায় ১৫২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি সরবরাহ করে, যা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রস্তাবিত দৈনিক খাওয়ার প্রায় ১৬৯%।

ভিটামিন-সি এর অভাবে যে দশটি রোগ দেখা দেয়:

বাংলা উইকিপিডিয়া এর তথ্য মতে-ভিটামিন সি এর অভাবে হলে যে ১০ টি রোগ দেখা দেয় তাহলো:

১. ভিটামিন-সি এর অভাবে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়ঃযাদের শরীরে ভিটামিন-সি-এর কম গ্রহণ করেন তারা খুব সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় যার ফলে শরীরে শক্তি কমে যায় এবং অবসন্ন হয়ে পড়েন।

২. মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়ঃ শরীরে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি দেখা দিলে একধরনের  বিরক্তিভাব দেখা দেয়। মেজাজ প্রায়ই খিটখিটে থাকে।

৩. ওজন কমে যায়ঃ যাদের শরীরে ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি হয়, তাদের হঠাৎ করে ওজন কমে যেতে পারে।

৪. পেশি বা গিটে ব্যাথা হয়ঃ রেগুলার ভিটামিন-সি-এর না খেলে গিঁটে বা পেশিতে ব্যথার অনুভব হয়।

৫. কালশিটে দাগ পড়েঃ ভিটামিন-সি- নিয়মিত গ্রহণ না করলে এর অভাবে দেহে কালশিটে দাগ পড়ে। তাই ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত ভিটামিন-সি জাতীয় ফল খান।

৬. দাত ও মাড়ির ক্ষতি করেঃ ভিটামিন-সি দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। এর ঘাটতি দেখা দিলে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা হতে পারে। তাই দাত মজবুত রাখতে নিয়মিত পরিমিত ভিটামিন সি জাতীয় ফল খেতে হবে।

. ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যায়ঃ ভিটামিন-সি এর অভাবে ত্বক ও চুল শুষ্ক হয়ে যায় এবং চেহারার লাভন্যতা কমে যায়।

৮. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়: ভিটামিন-সি-এর ঘাটতি হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। ফলে শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাধে।

৯. ক্ষত শুকাতে বাধা প্রধান করে: ভিটামিন সি এর ঘাটতিতে শরীরে কোন ক্ষত সৃষ্টি হলে তার নিরাময় প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। 

৯. ওজন বৃদ্ধি পায়: ভিটামিন সি এর ঘাটতিতে পেটে মেদ জমে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই শরীরের বাড়তি মেদ ঝরাতে ভিটামিন সি অনেক কার্যকরী। 

১০. রাসায়নিক বার্তাবাহক: ভিটামিন মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতে ব্যবহৃত বিভিন্ন হরমোন এবং রাসায়নিক বার্তাবাহক তৈরি করতে সহায়তা করে। কিন্তু ভিটামিন-সি এর অভাবে এই স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে।

সতর্কতা

এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে ভিটামিন সি একটি সংবেদনশীল পুষ্টি যা আগুনের তাপে ধ্বংস হতে পারে, তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার কাঁচা বা হালকা রান্না করে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

ভিটামিন-সি এর অপকারীতাঃ

ভিটামিন সি একটি জলে দ্রবণীয় ভিটামিন যা মাত্রাতিরিক্ত খেলে বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। তাত্ত্বিকভাবে ভিটামিন সি অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে আয়রনের অত্যধিক শোষণ হতে পারে। তাই কোন ভাবেই অতিরিক্ত ভিটামিন-সি খাওয়া যাবে না।

শেষকথা

আমাদের ভিটামিন-সি জাতীয় ফল যেমন লেবু, মাল্টা, জাম্বুরা, কমলা, আমরা একেবারেই এভেইলেবল। তাই আমরা চাইলে এটি রেগুলার গ্রহণ করতে পারি। যেহেতু ভিটামিন-সি এর অভাবে অনেক রোগ শরীরে বাসা, এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তাই আমাদের নিয়মিত ভিটামিন-সি গ্রহণ করা। প্রিয় পাঠক আপনাদের মনে কোন প্রশ্ন থাকলে দয়া করে জানাবেন। পরিশেষে আমার সাইটটি ভিজিট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। শরীরের যত্ন নিন, সুস্থ্য থাকুন এবং নিরাপদে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url