বাংলাদেশের অধিবাসীদের আর্থ সামাজিক জীবনধারায় ভূ-প্রকৃতির প্রভাব বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
বাংলাদেশের অধিবাসীদের অর্থ সামাজিক জীবনধারায় ভূপ্রকৃতির প্রভাব আলোচনা করা হলো? বন্ধুরা আপনারা গুগলের মাধ্যমে অনার্স প্রথম বর্ষের একটি প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন আমরা বাংলাদেশের অধিবাসীদের আর্থ সামাজিক জীবনধারায় ভূপ্রকৃতির প্রভাব সম্পর্কে খুব সুন্দরভাবে আপনাদেরকে তথ্যগুলো দিব নিচে বিস্তারিত জেনে নিন।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ
ভূমিকাঃ বাংলাদেশের অধিবাসীদের আর্থসামাজিক জীবনধারায় ভূপ্রকৃতির প্রভাব
আমাদের বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ আমাদের বাংলাদেশ অসংখ্য পাহাড় পর্বত বন জঙ্গল রয়েছে এগুলো থাকার কারণে বাংলাদেশের মধ্যে বহিঃশত্রু প্রবেশ সহজসাধ্যকর বিষয় নয়। মানুষের সাথে এই আবহমান প্রকৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য ও অকৃত্রিম সম্পর্ক রয়েছে। এই প্রকৃতির ছায়াতলে বিভিন্ন মানুষ শিশু এবং বয়স্ক প্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ এবং দ্বারা এর প্রকৃতির ছায়াতলেই জীবন ও জীবিকার নির্বাহ করে থাকে।
আর এই ভূপ্রকৃতির প্রায় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। আর এই প্রকৃতির প্রভাবের কারণেই কোন কোন অঞ্চলের মানুষ হয়ে ওঠে শক্তিশালী সাহসী কর্মঠ উদ্যম। আবার আমরা দেখতে পাই এই ভূপ্রকৃতির কারণেই দেখতে পাই কোন কোন অঞ্চলের মানুষজন হয়ে ওঠে অলস ও অকর্মঠ এবং কৃপণ। প্রকৃতির কারণেই আবার আমরা দেখতে পেয়ে থাকি যে কোন কোন অঞ্চলের অধিবাসী খুব আরাম আয়েশেই বা খুব সহজেই তাদের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতে সক্ষম হয়ে থাকে তাই এই ভূপ্রকৃতির কারণেই কোন অঞ্চলের মানুষ কঠিন পরিশ্রম করে অতি কষ্টে তারা জীবন ও জীবিকার মান নির্বাহ করে চলে।
বাংলাদেশের অধিবাসীদের আর্থসামাজিক জীবনধারায় ভূপ্রকৃতির প্রভাব কিছু ধারা?
বাংলাদেশের অধিবাসীদের আর্থসামাজিক জীবনধারায় ভূপ্রকৃতির প্রভাব আলোচনা বিস্তারে কিছু ধারা রয়েছে সেগুলো নিচে বিস্তারিত বলা হলোঃ
মানুষের জীবনধারাঃ আমরা দেখতে পাই যে ভূপ্রকৃতির সঙ্গে মানব জীবনের জীবনধারায় এক আধ্যাত্মিকতার মিলবন্ধন রয়েছে। মানুষের সার্বিক ও চলমান জীবনধারায় ভূপ্রকৃতির ব্যাপক প্রভাব বিস্তার রয়েছে। ভূ প্রকৃতির প্রভাবের ফলে পাহাড়ি মা পার্বত্য অঞ্চলের যে সকল মানুষজন দারিদ্র্যসীমার নিম্ন স্তরে বসবাস করে তারা খাদ্য ভাব এর কষ্ট পেয়ে থাকলেও তারা নারিদ্র হলেও তারা খুবই সৎ। আবার এই হবু প্রকৃতির প্রভাবের ফলেই সমতল ভূমি অঞ্চলের ব্যক্তিবর্গ মানুষজনেরা অনেকটা স্বাভাবিক ও সহজতর জীবন যাপন করে থাকে। আমার এসব অঞ্চলের বসবাস উপযোগী বলে জনবসতি খুব ঘন ও গভীরতা রয়েছে।
জীবন ও জীবিকার মান নির্বাহ করাঃ উপকৃতির প্রভাবের কারণে সমতল ভূমি ও পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষদের জীবন ও জীবিকার মান বিপরীতমুখী হয়ে পড়ে সমতল ভূমি অঞ্চলের মানুষ জনেরা খুব সহজেই ভালো ফসল জন্মাতে পারে এবং সহজে তাদের জীবন ও জীবিকার মান নির্বাহ করতে পারে বলে তারা অলসতা কাতর। এবং পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষজনেরা ফসল ফলানো তাদের জন্য একটু কঠিন হওয়ায় তাদের অনেক কষ্ট করে জীবন ও জীবিকার মান নির্ভর করতে হয় এবং তারা খুব সৎ ও পরিশ্রমী হয়ে থাকে।
চারিত্রিক প্রভাবঃ ধর প্রকৃতি মানুষের জীবনধারার ওপর পুরোপুরিভাবে প্রভাব বিস্তার করে না থাকলেও এর একটি আদর্শিক উদাহরণ মানুষের চরিত্রের ভিন্নতা ও এগুলো ভূপ্রকৃতির মাধ্যমেই পরিবর্তন করা সম্ভব। পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীরা সাধারণত খুব শক্তিশালী স্বাস্থ্যবান সাহসী পরিশ্রমী ও কষ্ট সহিংসু হয়ে থাকে পার্বত্য অঞ্চলের ব্যক্তিরা পাহাড়ি এলাকার পানি পরিবেশে তাদের দেহ মন ও চরিত্রের উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে থাকে তার মত কর্মীদের প্রায় প্রতিনিয়ত কোন কোন জন্তুর সাথে সম্মুখীন হতে হয় বলে তারা খুবই সাহসী অন্যদিকে সমভূমি অঞ্চলের মধ্যে সাহস উৎসাহী ও পরিশ্রম কম পরিলক্ষিত দেখা যায়।
আর্থ সামাজিক বা অর্থনৈতিক কার্যাবলীর ওপর ভূপ্রকৃতির প্রভাবঃ বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবস্থাকে নানাভাবে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বঙ্গোপসাগর থেকে যে আগত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু আমাদের বাংলাদেশের পাহাড়ে বাধা প্রাপ্ত হয়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের মত ঘটনা ঘটায় এই বৃষ্টির ফলে বাংলাদেশের কৃষি কাজে ব্যাপক উন্নতি সাধন ঘটে। যার ফলে শীতকালে রবি শস্যের মত ফসল উৎপাদিত হয়। এছাড়া অধিক অনাবৃষ্টি বহুল পাহাড়ে অঞ্চলে বনভূমির সৃষ্টি করে থাকে। এসব বনভূমি হতে প্রচুর পরিমাণে মূল্যবান কাঠ ও অন্যান্য বনজ উদ্ভিদ সংগ্রহ করা হয়।
তাছাড়া পাহাড়ের ঢালে যে সকল ফসল উৎপাদিত হয় তা হল যা আনারস রাবার ইত্যাদি। তাছাড়া মধুপুর অঞ্চলের অধিকাংশ স্থানে দেখা যায় কৃষি শিল্প বাণিজ্য পরিবহন ইত্যাদির বিশেষ উন্নতি সাধিত হয়েছে। তাছাড়া সম দলভূমি অঞ্চলের ও বহু নদ নদী থাকায় সড়ক পথ রেল পথ ও বিভিন্ন জনপথে পরিবহনে বেশ উন্নতি সাধিত হয়েছে এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে উপকূলীয় সমতলভূমির লবণাক্ত তার প্রভাবে বিশাল স্রোতের মতো বনভূমির সৃষ্টি হয়েছে।
এ বনভূমির প্রায়ই অর্থনৈতিক গুরুত্বতে বেশ কার্যাবলী ভূমিকা অবদান রাখে বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত কাঠের প্রায় ৬০ থেকে ৬৫% বনভূমি থেকে সংগ্রহ করা হয় তাছাড়া ভগ্ন উপকূলের প্রভাবে বাংলাদেশে দুটি স্বাভাবিক ও সামুদ্রিক বন্দর গড়ে উঠেছে যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের কৃষি শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক সহায়তা করে আসছে।
শিক্ষার উপর প্রভাবঃ বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতির প্রভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপরও ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। পাহাড়ে অঞ্চলের লোকেরা তারা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব কম দেয় কেননা তারা অনেক কষ্টকর জীবন যাপন করে থাকে তাই শিক্ষায় তারা কম সময় ব্যয় করতে পারে অন্যদিকে সমতল ভূমি অঞ্চলের মানুষেরা কম পরিশ্রম করে থাকলেও তারা অধিক সময় বিভিন্ন সাহিত্য বিভিন্ন কলা এবং বিজ্ঞান এর মত বিভিন্ন বিষয়ে বলি চর্চার মতো সুযোগ পেয়ে থাকে।
বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর ভূপ্রকৃতির প্রভাবঃ বাংলাদেশ হল একটি নদীমাতৃক দেশ তাই এদেশের নিচু অঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম হলো নৌকা লঞ্চ এবং স্টিমার যা নদীপথে ব্যবহৃত হয়। এবং এইসব অঞ্চল দিয়ে নৌ পথে বিভিন্ন পণ্য পরিবহন বেশ উপযোগী হয়ে থাকে। তাছাড়া সমতল অঞ্চলের নদী গুলোর উপর যেগুলো রয়েছে সেগুলো হল সেতু নির্মাণ করা হয়ে থাকে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো সহজ ও সহজলভ্য করার জন্য। বাংলাদেশের পাহাড়িয়া অঞ্চল যোগাযোগের ব্যবস্থার জন্য অনুকূল পরিবেশের নয় তাই এখানকার কোন কোন অঞ্চলে দেখা যায় সড়ক পথ ও রেলপথ নির্মাণ করা কষ্টসাধ্য ও অনেক অর্থনৈতিক ব্যয়বহুল হয়ে পড়ে।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ভূপ্রকৃতির প্রভাবঃ প্রকৃতির প্রভাব মানুষের সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও ব্যাপক সাড়া পড়ে থাকে। ভূ প্রকৃতির ফলে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষেরা সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তারা সাংস্কৃতি চর্চা এক ধরনের আবার সমতল ভূমি অঞ্চলের মানুষদের সাংস্কৃতিক চর্চা অন্য ধরনের হয়ে থাকে তাই পাহাড়ে অঞ্চলের লোকেরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা করে থাকে এবং সমভূমি অঞ্চলের লোকেরাও তাদের নিজেদের সাংস্কৃতিক চর্চা করে থাকে।
নগরায়ন ও শিল্পায়নের ওপরে ভূপ্রকৃতি প্রভাবঃ বাংলাদেশে নগরায়ন শিল্পায়ন ও শিল্প কারখানার স্থান নির্বাচনে ভূপ্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপক অবদান রয়েছে। সাধারণত নদীর তীরে এদেশের শহরগুলো গড়ে ওঠে থাকে যেমন চট্টগ্রাম খুলনা বাগেরহাট নারায়ণগঞ্জ এসব অঞ্চলেই বন্দর বা বিভিন্ন শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠিত হয়। যেমন রাজশাহীর অঞ্চলে যে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে তা হল রেশম শিল্প ওই অঞ্চলের কিছু গুটি পোকা চাষের উপযোগী ভূ প্রকৃতির জন্য উন্নতি সাধিত হয় এবং সিলেট অঞ্চলেও ছোট ছোট পাহাড় এবং সেইসাথে প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে চাষ শিল্পের জন্য উপযোগ্য হয়ে ওঠে।
অপরাধ প্রবণতার ওপর প্রভাবঃ ভূ প্রকৃতির ওপর অপরাধ প্রবণতার কম বেশি ব্যাপক প্রভাব রয়েছে যেমন বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সমতল ভূমি অঞ্চলের ব্যক্তিবর্গদের মাঝে তুলনামূলকভাবে অপরাধ প্রবণতা কম থাকে এবং পাহাড় পর্বত ও পাহাড়ি অঞ্চলে অপরাধপ্রবণতার মাত্রা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে এর একটি উদাহরণ হল বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে দেখা যায় অপরাধ প্রবণতা বেশি সংঘটিত হয়ে থাকে যেমন সেই অঞ্চলটি পাহাড় ঘেরা এবং দুর্বল এলাকা যেখানে অপরাধীরা লুকিয়ে সহজে তাদের কর্মকাণ্ড জানাতে পারে সেগুলো হলো খুন ধর্ষণ হত্যা এবং হয়ে যাক অতি সহজে পালিয়ে যেতে পারে।
ভূপ্রকৃতির ওপর ভাষাগত প্রভাবঃ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দেখা যায় তাদের ভাষার মধ্যে একটি স্বকীয়তা রয়েছে আর এটি ভূপ্রকৃতির বিভিন্ন উপায় একেক রকম হয়ে থাকে যেমন পাহাড়ি অঞ্চলে ব্যক্তিবর্গদের ভাষা তাদের নিজেদের মতো এবং সমতল ভূমি অঞ্চলের মানুষদের ভাষা তাদের সমতল ভূমি অঞ্চলের ব্যক্তিবর্গদের ভাষার মতো এই দুটি বিষয়ের মধ্যে ভাষাগত দিক দিয়ে পার্থক্য রয়েছে।
উপসংহারঃ বাংলাদেশের অধিবাসীদের আর্থ সামাজিক জীবনধারায় ভূ-প্রকৃতির প্রভাব
পৃথিবীর প্রায় বিভিন্ন দেশকে যেমন আমরা আলাদা আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে থাকি তাদের ভূপ্রকৃতির পার্থক্যের মাধ্যমে। তেমনই বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতির পার্থক্যের কারণেই কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক সত্তা ও ভিন্ন হয়ে থাকে। এই ভূপ্রকৃতির দ্বারা মানুষের সামগ্রিক জীবনধারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সুতরাং আমরা বলতে পারি ভূপ্রকৃতির বিরূপ আচরণ আমাদের মানবজীবনকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তেও পৌঁছাতে সক্ষম হয় অতএব প্রত্যেকটি মানুষের উচিত ভূ প্রকৃতির এই বদ্ধ পরিবেশ গড়ে তোলা যেন ভূ প্রকৃতি মানুষের জীবন ধারণের পথ সহজ ও সহায়ক করে তোলে যেন ভূপ্রকৃতি মানুষের জীবন এর পথ চলায় বাধা প্রাপ্ত না হতে পারে।
বন্ধুরা এমন নিত্য নতুন আরো অনার্স পড়ুয়া ব্যাক্তিবর্গ বন্ধুরা এমন আরো শিক্ষা বিষয়ক আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ।২০২
বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url