আখরোটের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

যারা বাদাম খেতে পছন্দ করেন, তাদের কাছে অতি পরিচিত নাম হচ্ছে আখরোট। অনেকেই মনে করেন এ বাদামটিতে ফ্যাট আছে তাই এড়িয়ে চলেন। আসলে কিন্তু তা সঠিক নয়। আখরোটে থাকা ফাইবার, প্রোটিন ও ওমেগা থ্রি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরে নানাভাবে উপকার আসে।

আখরোট

সূচিপ্ত্রটি দেখে নিন

ভূমিকাঃ

আখরোট খেলে হৃদরোগ, ক্যান্সার সারানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। আখরোট দুই ধরনের কালো কিংবা বাদামি দুটাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তবে আসুন আর দেরি না করে জেনে নেই আখরোট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে

আরো পড়ুনঃটমেটো খাওয়ার উপকারিতা ও উপকারিতা জেনে নিন 

আখরোটের পুষ্টিগুণঃ

আখরোট একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। প্রতি ১০০ গ্রাম আখরোটে থাকে ১৫.২ গ্রাম প্রোটিন, ৬৫.২ গ্রাম স্নেহ পদার্থ এবং ৬.৭ গ্রাম ফাইবার । ভিটামিন  ২০ IU,ম্যাগনেসিয়াম ১৫৮ মিগ্রা, ক্যালসিয়াম ৯৮ মি.গ্রাম, জিংক ৩.০৯ মিগ্রা পটাসিয়াম ৪৪১ মিগ্রা, ।  এরমধ্যে অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড বিদ্যমান।

আরো পড়ুনঃকেন কাঁচা রসুন খাওয়া উচিত জেনে নিন বিস্তারিত 

 উপকারিতাঃ

আখরোট এমন এক প্রকার বাদাম যার মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে । শরীরের হাজার রকমের সমস্যা দূরে করতে ডাক্তারগণ আখরোট  খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

 স্মৃতিশক্তি বাড়ায়ঃ

স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে অনেক সাহায্য করে আখরোট। এতে আছে ওমেগা থ্রি যা অবসাদ কাটাতে সাহায্য করে। বাদামটি মস্তিষ্কের কোষের সজীবতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

আখরোট হৃদযন্ত্র ভালো রাখেঃ

আখরোটে থাকা ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের জন্য বেশ  উপকারী। আপনি প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাপে আখরোট খান তবে আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এই বাদাম টি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 

আরো পড়ুনঃঅতিরিক্ত চিন্তা দূর করার উপায়-টেনশন দূর করা ১২ টি সহজ উপায়

ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেঃ 

আখরোটে  রয়েছে অনেক ভিটামিন বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ত্বকের বলিরেখা এবং বয়সের ছাপ দূর করতে প্রতিদিন আখরোট খেতে পারেন।

গর্ভস্থ শিশুর ও মায়ের উপকারিতাঃ

আখরোট মাতৃগর্ভে থাকা শিশু ও মায়ের জন্য অনেক উপকারি। আখরোটে থাকে পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। যা গর্ভের শিশুর এলার্জিক সমস্যা দূর করে। আখরোটে থাকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ফলিক এসিড গর্ভবতী ও অনাগত সন্তানের জন্য বেশ উপকারী।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধেঃ

ডাক্তারগণ বলেন যে, যে-কোন ধরণের বাদামই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাঁরা নিয়মিত আখরোট খেয়ে থাকেন । তাঁদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় অনেকটাই কম হয়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ

আখরোট মরণ ব্যাধি রোগ ক্যান্সার দূর করতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।আখরোটে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, পলিফেনলস এবং ইউরোলিথিন অ্যান্টি-ক্যান্সার বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। তাই স্তন, কোলন এবং প্রোস্টেট রোধে বড় ভূমিকা রাখে আখরোট। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চ জানিয়েছে আখরোট খেলে তা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

শিশুর মস্তিস্কের বিকাশ করেঃ

আখরোট শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, আখরোটে থাকা ভিটামিন ই ওমেগা থ্রি মেলাটোন এবং এন্টিঅক্সিজেন শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তাই আপনার শিশুকে ছোটবেলা থেকে আখরোট খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। 

হাড় মজবুত করেঃ

আখরোটে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম । এটি শরীরের হাড় মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । যদি কোন মহিলাদের ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা না থাকে। তবে ৩০ বছর বয়সী মহিলাদের হাড়ের গঠন ঠিক রাখতে আখরোট খেতে পারে ।

ভালো ঘুম হয়ঃ

অনিদ্রা সমস্যা থাকলে খাবার তালিকায় আখরোট রাখতে পারেন।আখরোটে থাকে মেলাটোনিন  যা ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক। সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আখরোট খেলে ভালো ঘুম হয়।এতে উপস্থিত ফ্যাটি এসিড ওমেগা থ্রি রক্তের চাপকে কম করে এবংমানসিক চাপ কমাই।

আরো পড়ুনঃছেলেদের ছোলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

আখরোটের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াঃ

অতিরিক্ত কোন খাবার খাওয়া ঠিক নয়। প্রয়োজনে বেশি খেলে শরীরে পুষ্টি উপাদানগুলোর ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। তাই অন্য সব খাবারের মতোই আখরোটও পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত। অধিক পরিমাণে আখরোট খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে

  1. এলার্জি সমস্যা হতে পারে 
  2. লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে 
  3. কালো আখরোটে থাকে ফাইটেটস শরীরের আয়রন শোষণ করে নেয। ফলে বেশি পরিমাণে কালো আখরোট খেলে শরীরের আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
  4. বাদামে যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের আখরোটে এলার্জি থাকতে পারে  

আখরোট খাওয়ার নিয়মঃ 

আখরোট খাওয়ার সাধারণত কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যেকোন সময় যেকোনোভাবে খাওয়া যেতে পারে এটি। তবে বিশেষজ্ঞরা আখরোট পানিতে ৫-৬ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে খাওয়ার পরামর্শ দেন। এ নিয়মে খেলে সঠিক পরিমাণে পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। এছাড়া দুধ বা মধুর সাথে মিশিয়ে খেলেও এর পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। অনেকে আবার তেল ছাড়া হালকা ভেজে খেয়ে থাকেন সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবে। 

শেষ কথাঃ 

এ বিষয়ে যদি আপনি আরো জানতে চান তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করুন। আমাদের পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লাগলে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। তাহলে আজকে তাহলে এখানেই শেষ করা যাক। কথা হবে পরের কোন একটি  আর্টিকেলে ধন্যব।২০৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url