র‍্যাম কি? র‍্যাম কিভাবে কাজ করে বিস্তারিত জেনে নিন

 

আমরা প্রত্যেকেই ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করি। কিন্তু আমরা কেউই জানিনা যে সেটার র‍্যাম কি বা র‍্যাম কিভাবে কাজ করে। আমরা যখন কোন ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন কিনতে যাই  তখন আগে দেখি যে সেটা র‍্যাম কত। কারণ মোবাইল বা ল্যাপটপ এর মূল চালিকা শক্তি হল একটি র‍্যাম। তাহলে আমরা আজ যে বিষয় জানবো সেটা হলো র‍্যাম কি বা র‍্যাম কিভাবে কাজ করে।

র‍্যাম কি? র‍্যাম কিভাবে কাজ করে?

পোস্ট সূচিপত্রঃ


র‍্যাম (Ram) কি?


র‍্যাম হল একটি কম্পিউটারের বা একটি স্মার্টফোনের মৌলিক বা মূল অংশ। যা একটি কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের তথ্য সংরক্ষণের একটি অস্থায়ী মাধ্যম। র‍্যাম এর মধ্যে আমরা যেকোনো ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করতে পারি। সাধারণত কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মাদারবোর্ডের সাথে র‍্যাম সংযুক্ত থাকে। একটি মোবাইল ফোনে বা একটি কম্পিউটারে যদি উন্নত মানের র‍্যাম না থাকে তাহলে আপনারা যে কোনো কারণ দ্রুততার সাথে শেষ করতে পারবে না।


র‍্যাম (Ram) এর পূর্ণরূপ কি?


Ram এর পূর্ণরূপ হলঃ Random Access Memory


র‍্যাম (Ram) এর কাজ কি?


র‍্যাম হলো একটি কম্পিউটারের সব থেকে জরুরি অংশ। র‍্যাম এর কাজ হল একটি কম্পিউটার বা একটি মোবাইল ফোনের তথ্য বা উপাত্ত সংগ্রহ করে রাখা। র‍্যাম হলো একটি কম্পিউটার বা একটি স্মার্টফোনের অস্থায়ী স্মৃতি।

আরো পড়ুনঃ ফিচার ইমেজ তৈরীর নিয়মাবলী

র‍্যাম এর মধ্যে কোন প্রকারের তথ্য বা উপাত্ত কখনো স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা যায় না। কম্পিউটার ব্যবহারের সময় যদি কম্পিউটার বন্ধ করা হয় বা পুনরায় চালু করা হয় তাহলে র‍্যামের সব তথ্য মুছে যায়।


তাই আমরা অনেক সহজে বলতে পারি যে র‍্যাম হল একটি কম্পিউটারের মৌলিক উপাদান। কেননা একটি স্মার্টফোন বা একটি কম্পিউটার কত দ্রুত সম্ভব কাজ করতে পারে তা নির্ভর করে তার র‍্যামের উপর।


কম্পিউটারের র‍্যাম (Ram) কি?


কম্পিউটারের র‍্যাম হলো যখন আমরা কম্পিউটার এ কোনো কাজ করি,ও সেই কাজের সাথে জড়িয়ে থাকা তথ্য বা উপাত্ত গুলি কম্পিউটারের র্যাম নিজের কাছে সংগ্রহ করে নেয় বা সঞ্চিত করে নেয়।


এবং তারপর র‍্যাম এর মাধ্যমে সেই সকল অস্থায়ী তথ্য বা উপাত্ত গুলো প্রসেসর মাধ্যমে আমরা কম্পিউটারে প্রবেশ করিয়ে আমরা যে সকল কাজ গুলো করবো সেই সকল কাজগুলি অতি দ্রুত স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারি।


আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের র‍্যাম যত বেশি উন্নত মানের হবে ও অধিক ফ্রিকোয়েন্সির হবে তখন ডাটা প্রসেসিং এর কাজ গুলি ততটা দ্রুতই হবে।


আরো পড়ুনঃ বিদ্যুৎ ও আধুনিক জীবন ও দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুৎ এর ব্যবহার। 


আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোনে যদি র‍্যাম না থাকে তাহলে আপনার ওই সকল ডিভাইসটি কখনোই চালু হবে না।কারণ কম্পিউটার বা স্মার্টফোন চালু করার সাথে সাথে অপারেটিং সিস্টেম এর সাথে জড়িত থাকা সকল তথ্য উপাত্ত গুলি র‍্যাম এ সংগ্রহ করে ।


ডাটা প্রসেসিং হবার পরে আমাদের কম্পিউটার বা স্মার্টফোন পুনরায় চালু হয়।র‍্যান্ডম এক্সেস মেমোরি বা র‍্যাম এর আকার , গঠন, তার ধারণ ক্ষমতা এবং দ্রুতগতিতা আলাদা আলাদা হতে পারে।


র‍্যাম (Ram)এর প্রয়োজনীয়তা?


কম্পিউটারে র‍্যাম ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে এটি বলতে পারি যে একটি কম্পিউটারের র‍্যাম মেমোরির কার্যকারিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য। কারণ এটি এমন একটি উপাদান যা তার বিশেষ গতির দিক দিয়ে তার ভাল কার্যক্রম সবচেয়ে বেশি উদ্ভাবিত করে।


যেমনটি আমরা ইতিমধ্যে দেখেছি র‍্যাম প্রসেসরটিকে তার ক্রিয়া-কলাপ গুলিতে সহায়তা করার জন্য দায়বদ্ধ থাকে যাতে এটি মেমোরির উদ্দেশ্যে ডাটা প্রোগ্রামিং চালানোর সময় প্রসেসর এর যে সমস্ত নির্দেশিকা এবং ডেটা ব্যবহার করা প্রয়োজন।


ধরুন আপনি আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপে বা স্মার্টফোনে কয়েকটি প্রোগ্রাম চালানোর জন্য কয়েকটি ট্যাব ওপেন করলেন তখন আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের বা আপনার স্মার্টফোনের র‍্যাম যদি কমা হয় তাহলে আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে আপনার যতটুকু গতি বৃদ্ধিতে দরকার ততটুকু আপনি পাচ্ছেন না তখন আপনার কাজটি শেষ হচ্ছে না।


তাই আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের র‍্যাম কমা হলে কখনোই আপনি আপনার দ্রুতগতির কারণগুলো শেষ করতে পারবেন তাই কম্পিউটারের বা স্মার্টফোনে একটি ভালো র‍্যাম এর প্রয়োজন হয়।


র‍্যাম কি ধরনের স্মৃতি?


র‍্যাম হল একটি অস্থায়ী মেমোরি। আমরা র‍্যামকে সাধারণত মানুষের সাথে তুলনা করতে পারি। কারণ মানুষেরও রয়েছে তিন ধরনের স্মৃতি এবং সেই স্মৃতি গুলোর মধ্যে রয়েছে একটি অস্থায়ী স্মৃতি ।


আমরা কেন মানুষের সাথে তুলনা করতে পারি । ধরুন আপনি কোন একটা জিনিস পড়লেন কিন্তু সেটি সম্পূর্ণ মনে রাখতে পারলেন না কিছু অংশ মনে রাখতে পারলেন এবং বাকি টুকু ভুলে গেলেন এটি সাধারণত অস্থায়ী স্মৃতির মধ্যে পড়ে।


র‍্যাম ও ঠিক এমন একটা জিনিস যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভেতরে বিদ্যুৎপ্রবাহ চলতে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত সে আপনার সব তথ্য সেভ করতে পারবে এবং যখন তার মধ্যে হতে বিদ্যুৎ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে তখন সেটি আপনার তথ্যগুলোকে সেভ করে রাখতে পারবেনা তাই আমরা র‍্যামকে অস্থায়ী স্মৃতি বলে থাকি।


র‍্যাম (Ram) কে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয় কেন?


র‍্যামকে সাধারনত এই কারণে অস্থায়ী মেমোরি বলা হয় যে সেটি যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভেতরে বিদ্যুৎ প্রবাহমান থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত সে আপনার সমস্ত ডেটা বা তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে পারবে। এবং যখন তার ভেতর হতে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে তখন আপনার ডেটা বা তথ্য সবকিছু মুছে যাবে তাই র‍্যামকে কম্পিউটারের বা স্মার্টফোনের অস্থায়ী মেমোরি বলা হয়।


র‍্যাম (Ram) এর বৈশিষ্ট্য?


আপনার কম্পিউটারের সিপিউ এবং মোবাইলের ভিতরে এক ধরনের এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড থাকে। তবে এর মধ্যে কোন কিছু সংরক্ষণ হয় না এটি একটি অস্থায়ী মেমোরি। কেবলমাত্র এখান থেকে কম্পিউটার মোবাইলের জন্য কাজের স্থান সংগ্রহ করা হয় । মনে করুন আপনার কাছে একটি ফোন আছে এবং সেটি বন্ধ আছে এসময় বন্ধ থাকা অবস্থায় আপনার ফোনের রেম একেবারে খালি এবং তা ব্যবহার করা হচ্ছে না।


কিন্তু আপনার ফোন স্টোরেজে মেমোরি কার্ডও রয়েছে বন্ধ করার পরে আবার পুনরায় যখন চালু করবেন তখন সেখানে দেখবেন একটি অপারেটিং সিস্টেম লোড হবে। এই অপারেটিং সিস্টেমটি প্রথমে আপনার র‍্যাম ব্যবহার করবে।


এবং আপনার প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন এর কাজ শুরু করে দিবে। যদি অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করার পরেও আপনার ফোনের র‍্যাম ব্যবহার করা হয় । আবার যখন আপনার মোবাই্লে একটি নতুন অ্যাপ্লিকেশন চালু করবেন তখনই আপনার মেমোরী কার্ডটি ফুল দেখায়।


র‍্যাম (Ram) প্রকারভেদ?


র‍্যাম সাধারনত দুই প্রকারঃ

Statistic ram (স্ট্যাটিসটিক র‍্যাম)

Dynamic ram (ডায়নামিক র‍্যাম)


মোবাইলে র‍্যাম (ram) এর কাজ কি?


মোবাইলের র‍্যাম বলতে আমরা যা বুঝি তাহলে মোবাইল কত স্পিডে চলবে সেটি নির্ভর করে একটা র‍্যামের উপর যদি আপনার মোবাইলের র‍্যাম বেশি হয় তাহলে আপনি বেশি বেশি অ্যাপস ইত্যাদি বিষয় মোবাইলে ইন্সটল করে রাখতে পারবেন।


যেমন অনেকে আছে যারা বলে যে আমার মোবাইল স্লো বা হ্যাং করে বেশি অ্যাপস ডাউনলোড হয় না বেশি কিছু ডাউনলোড করলে মোবাইল হ্যাং হয়ে যায়। এসব কিছু কিন্তু আপনার র‍্যাম এর জন্য হয়।


আরো পড়ুনঃ ঘি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন


আপনি বেশি র‍্যামের এর মোবাইল নেবেন আপনার মোবাইল ফাস্ট চলবে এবং বেশি বেশি অ্যাপস ইত্যাদি ডাউনলোড দিতে পারবেন। সাধারণত এমন হয় 1জিবি 2 জিবি 3 জিবি 4 জিবি 5 জিবি র‍্যামের মোবাইল নেবেন ততো আপনার অনেক বেশি মূল্য পড়ে যাবে।


কিন্তু আপনি যদি কম দামের মোবাইল নেন তাহলে আপনাকে অনেক প্রবলেম বা সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে যখন আপনি বেশি র‍্যামের এর মোবাইল নিবেন তো আপনাকে ঐ সমস্যাগুলির সম্মুখীন হতে হবে না । যদি আপনি আপনার মোবাইলে বেশি অ্যাপস ডাউনলোড করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই বেশি র‍্যামের মোবাইল নিতে হবে।


র‍্যাম (Ram) কি ধরনের মেমোরি?


র‍্যামকে আমরা ভার্চুয়াল মেমোরি বলে থাকি। বেশিরভাগ আধুনিক অপারেটিং সিস্টেমের উন্নয়নের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর জন্য একটি বিশেষ প্রক্রিয়া আছে সেটিকে আমরা ভার্চুয়াল মেমোরি ও বলে থাকি।


কম্পিউটারের পেজ ফাইল হার্ডডিক্স এর একটি অব্যবহৃত অংশ হিসেবে রাখা হয়। পেজ ফাইল বা র‍্যামের সংযুক্তিতে পুরো সিস্টেমের প্রধান মোট মেমোরি বলা হয়।


ধরুন একটি কম্পিউটারে 5 জিবি র‍্যাম এবং 2 জিবি পেজ ফাইল। যখন সেটি অপারেটিং সিস্টেমের জন্য মোট মেমোরি হবে 7 জিবি। তখন সিস্টেমের সাথে দেয়া মেমোরি কম থাকে এবং একটি পেজ ফাইল ব্যবহার করা হয়। তখন তার কাজ সম্পাদনের জন্য এই পদ্ধতির ব্যবহার সিস্টেম এর কার্যক্ষমতা হ্রাস করে কারণ হার্ডডিক্স র‍্যামের চেয়ে কম গতিসম্পন্ন।


এই পোস্ট এর সর্বশেষ কথা


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আমি র‍্যাম বিষয় নিয়ে একটি পোষ্ট লিখেছি। যদি এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের মাঝে শেয়ার করে দিন ।এবং যদি আপনাদের এই পোস্ট বিষয়ে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে ও সেই সাথে আপনাদের এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে এমন আরো পোস্ট পেতে নিচের কমেন্ট বক্সে গিয়ে আমাকে কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url