ঘি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
ঘি খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে কিছু উপকারিতা হলো ঘি আমাদের ক্ষত সারাতে কাজ করে। ঘি আমাদের শরীরে অনেক প্রয়োজনীয় ঔষধ হিসেবে কাজ করে। যেমন আমাদের দেহের গ্যাস্ট্রিকের জন্য কাজ করে আবার দেহের ওজন বৃদ্ধিতে কাজ করে আবার ওজন কমাতেও কাজ করে। অতএব ঘি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
- ঘি খাওয়ার উপকারিতা
- ঘি খাওয়ার অপকারিতা
- ঘি খাওয়ার নিয়ম
- ঘি এর ব্যবহার
- ঘি এর পুষ্টি উপাদান
- গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
- প্রতিদিন ঘি খেলে আমাদের শরীরে কি ঘটে
- খালি পেটে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
- ঘি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
- শীতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
- গরমে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
- রূপচর্চায় ঘি এর ব্যবহার
- ঘি নিয়ে সর্বশেষ কথা
- সব মিলিয়ে শেষ কথা
ঘি খাওয়ার উপকারিতা
- ঘি খেলে দেহের মধ্যে গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা দূর হয় ।
- ঘি মানসিক চাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে আবার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ।
- ঘি ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে ।
- ঘি খেলে শরীরে মিনারেল ও ফ্যাটি এসিড ভালোভাবে শোষিত হয়।
- আমাদের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
- ঘি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ঘি খাওয়ার অপকারিতা
- অতিরিক্ত ঘি খেলে শরীর মধ্যে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে
- ঘি অতিরিক্ত খেলে দেহের ওজন বেড়ে যেতে পারে
- ঘি অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে
- আবার ঘি অতিরিক্ত খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে
- আবার যাদের হাড়ের সমস্যা আছে তাদের ঘি বেশি না খাওয়াই ভালো ভালো
আরো পড়ুনঃ ১৫টি দেশি ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
ঘি খাওয়ার নিয়ম
ঘি এর মধ্যে প্রোটিন কার্বোহাইড্রেট সুগার ও ফ্যাটি এসিড এর পাশাপাশি ফাইবার থাকে। একজন সাধারণ ব্যক্তি প্রতিদিন তিন থেকে চার চামচ ঘি সেবন করতে পারেন। ঘি রুটি দিয়ে খাওয়া যায় আবার রান্না করার সময় তিল এর পরিবর্তেঘি ব্যবহার করতে পারেন। কারণ রাত এর থেকে দিনে খাওয়াটা বেশি উত্তম ।
ঘি এর ব্যবহার
আমরা জানি ঘি এর ব্যবহার সকল ক্ষেত্রে রয়েছে যেমন আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর করতে সাহায্য করে আবার তার পাশাপাশি তেল এর পরিবর্তে রান্না করার কাজেও
ব্যবহার করে থাকি। ঘি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপক চাহিদা পূরণ করে থাকে যেমন
আমরা উপরে জেনে এসেছি যে আমাদের শরীরে হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে আবার ঘি
খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়।
ঘি এর পুষ্টি উপাদান
ঘি এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান রয়েছে এর মধ্যে গায়ের ঘি আমাদের জন্য
বেশি লাভজনক হয় কেননা গাওয়া ঘি আমাদের দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি করতে
সাহায্য করে না বরং আমাদের দেহের কোলেস্টেরল মাত্রা সহনীয় তার মধ্যে রাখতে
চেষ্টা করে।
গাওয়া ঘি ফাইবার এর মাত্রা অধিক পরিমাণে থাকে যা আমাদের দেহের দূষিত পদার্থ
গুলোকে বের করতে সাহায্য করে যার জন্য আমাদের দেহে দূষিত পদার্থ গুলো দ্রুত বের
হয় আবার শরীরের সকল সমস্যা দ্রুত দূর হয়।
আরো পড়ুনঃ ফ্রি টাকা ইনকাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
গরম ভাতে ঘি আমাদের প্রায় সবারই ভালো লাগে। কিছু কিছু চিকিৎসক আমাদের প্রতিদিন
ঘি খেতে নিষেধ করেছেন আবার গবেষকরা বলেছেন অন্য কথা ঘি খাওয়ার সাথে শরীর খারাপের
কোন সম্পর্ক নেই বরং আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কে সচল রাখতে
সাহায্য করে ।
- হজম ক্ষমতা উন্নতি ঘটায়
- চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
- আবার ক্যান্সার রোগ কি দূরে রাখে
- ঘি আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখতে রাখতে সহযোগিতা করে
প্রতিদিন ঘি খেলে আমাদের শরীরে কি ঘটে
দৈনিক খাবারের সাথে তিন থেকে চার চামচ ঘি আমাদের প্রত্যেক দিনের খাবারের তালিকায় রাখা উচিত। প্রতিদিন খেলে আমাদের শরীরে যা ঘটবে তা হল আমাদের দেহের উন্নতি সাধনে সহায়তা করবে । আবার আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
প্রতিদিন ঘি খেলে আমাদের ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে এবং আমাদের ত্বককে আরো মসৃণ করে তোলে। তাই আপনাদের সকলের উচিত প্রত্যেক দিনের খাবারের তালিকায় ঘি রাখা।
খালি পেটে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা প্রায় সকলেই রিফ্রেশ হয়ে কেউ হয়তো এক কাপ চা কাপ কফি
খাই আবার কেউ নাস্তা খায়। আপনারা অনেকে জানেন না যে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে
এক চামচ ঘি খেলে কি হয়
- প্রতিদিন ঘি খেলে আমাদের শরীর সতেজ থাকে
- কোষের কার্যক্রমের ক্ষমতাকে সচল রাখে
- হাড়ের ব্যথা প্রতিরোধ করে
- মস্তিষ্কের কোষ কে সক্রিয় রাখে
- ও দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে
ঘি খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
আপনারা অনেকেই জানেন যে ঘিযেমন আমাদের শরীরের জন্য উপকারী আবার আমাদের শরীরের
জন্য কিন্তু ক্ষতির কারণ হতে পারে। আমরা কোনকিছুই অতিরিক্ত খাব না। ঘি খেলে
যেমন উপকার আছে তেমন ক্ষতি আছে।
ঘি যেমন আমাদের শরীরের হাড়কে মজবুত রাখে তেমন কিন্তু বেশি খেলে সমস্যা হয়। আবার ঘি খেলে যেমন দ্রুত ওজন কমে আবার বেশি খেলে কিন্তু ওজন বেড়ে যায় । তাই আমরা সবকিছুই অল্পমাত্রায় খাওয়ার চেষ্টা করব।
শীতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
শীতকালে ঘি খেলে আমাদের দেহে কোন প্রকারের রোগ অসুখ বিসুখ বাসা বাঁধতে পারে না বিশেষ করে শীতে আমাদের অনেকেরই সর্দি জ্বর হয়ে থাকে। তাই এই শীতে সর্দি জ্বর থেকে মুক্তি পেতে হলে শীতে ঘি কোন বিকল্প নেই ।
আবার শীতে মধ্যে আমাদের শরীরকে গরম রাখতে সাহায্য করে। শীতকালে আমাদের শরীরের ত্বকের কোষগুলো নিঃশেষ হয়ে যায়। তখন ঘি আমাদের ত্বকের কোষগুলোকে সতেজ রাখে।
শীতে ঘি আমাদের শরীরের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই আমরা প্রত্যেক শীতে
ঘি খাওয়ার চেষ্টা করব।
গরমে ঘি খাওয়ার উপকারিতা
বিভিন্ন গবেষকদের মতে তারা বলেছেন ঘি একটি ল্যাকটোজেন ফুড। এতে রয়েছে ভিটামিন এ,
ডি, সি, ও কে , সমৃদ্ধ গবেষকরা বলেছেন ঘি যেমন আমাদের শরীরের জন্য শীতকালে উপকারী
তেমনি গরমেও এর উপকারিতা অনেক। যেমনঃ
শরীরের শক্তি বাড়ায় ও আমাদের শরীরকে আরো শক্তিশালী করে তুলে আমাদের দেহে কোষের
শক্তি বৃদ্ধির জন্য ঘি খাওয়া প্রয়োজন। শরীরে স্বাস্থ্যকর প্রোটিন জোগাতে
সহায়তা করে।
শরীরে জলের অভাব মেটায় ঘি শরীর এর অভ্যন্তরে আদ্রতা ভারসাম্য রক্ষার্থে খুব
উপকারী। এটি আপনাকে গরমকালে ভেতর থেকে হাইড্রেটেড রাখে।
হজম শক্তি বা বিপাকক্রিয়া উন্নত করে বিভিন্ন পুষ্টিবিদদের মতে ঘি শরীরের হজম উন্নতি এবং পুষ্টির মান শোষনে অন্যতম খবার ।ঘি তে আছে অনেক পরিমাণের বিউটারিক অ্যাসিড।
শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে গবেষণায় দেখা গেছে যে ঘি খাওয়ার পরে শরীর ও মন শীতলতা অনুভূত হয়। তাই গরমকালে ঘি শরীরকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে।
রূপচর্চায় ঘি এর ব্যবহার
ঘি শুধু আমাদের খাবারে ব্যবহার হয়না বরং আমাদের রূপচর্চায় ঘি ব্যবহার
হয়।
ডার্ক সার্কেলঃ আপনার যদি চোখে কোন প্রকারের দাগ থেকে থাকে তাহলে রাতে ঘুমানোর
আগে একটু ঘি মেখে নিন তারপরে সকালে ঘুম থেকে উঠে সেটি ধুয়ে ফেলুন। তাহলে দেখবেন
আপনার চোখের কোনার দাগ গুলো মুছে গেছে।
ফাঁটা ঠোটঃ আপনার ঠোঁট যদি শক্ত থাকে আর যদি তা প্রতিনিয়ত ফাটতে থাকে তাহলে আপনি
প্রতিদিন রাতের বেলা ঘুমানোর আগে একটু ঘি হাতে নিয়ে ঠোঁটে দিতে পারেন।
শুষ্ক ত্বকঃ আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে আপনি যা করতে পারেন তাহলো একটু ঘি
গরম করে গোসলের আগে তা সারা শরীরে মেসেজ করে নিন এবং কিছুক্ষণ পরে তা ধুয়ে ফেলে
তাহলে দেখবেন আপনার শরীরে আবার মসৃণতা ফিরে এসেছে।
নির্জীব ত্বক ঃ ত্বক ময়েশ্চারাইজার করতে ঘি দুধ ও বেসন মিশ্রিত করুন
এবার এটি আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন এবং কিছুক্ষণ পরে দেখবেন আপনার ত্বকের সজীবতা
ফিরে এসেছে।
ঘি নিয়ে সর্বশেষ কথা
আমরা জানি আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনে ঘি এর প্রয়োজনীয়তা অনেক যা বলে শেষ করা যাবেনা।আপনারা প্রতিদিনের খাবারে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘি রাখবেন এবং আপনারা প্রত্যেকে প্রতিদিন খালি পেটে ২-৩ চামচ ঘি রাখবেন ।
সব মিলিয়ে শেষ কথা
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আমার এই পোস্টটি যদি আপনাদের ভাল লেগে থাকে ।তাহলে আমার
এই পোষ্টটি সকলের মাঝে শেয়ার করুন এবং আপনারা এ ধরনের আরো পোস্ট পেতে আমাকে
কমেন্ট করে জানান। ধন্যবাদ।
বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url