বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি কি খাওয়ানো উচিত বা উচিত নয় বিস্তারিত জানুন
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ আসসালামুয়ালিকুম, ইতোমধ্যেই আমাদের মাঝে আবার চলে আসছে শীতকাল এই শীতকালে অনেকেই নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া নাক দিয়ে পানি পড়া জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েন সুতরাং শীতকালে বেশি অসুস্থ হয় আমাদের ছোট্ট সোনামণিরা। এই সময় বাচ্চাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে এবং তাদেরকে সুষম খাদ্য প্রদান করতে হবে। কারণ পুষ্টিকর খাদ্য আর সুষম খাদ্য থেকেই তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তাহলে চলুন বাচ্চাদের সর্দি-কাশি হলে কোন খাবারগুলো খাওয়াবেন আর কোনগুলো খাওয়াবেন না জেনে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
- বাচ্চাদের ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হলে কি কি খাবার খাওয়ানো উচিত
- বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে যে খাবারগুলো খাওয়াতে হবে তার বিস্তারিত
- বাচ্চাদের ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হলে যেসব খাবার খাওয়ানো উচিত নয়
- বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে যে খাবারগুলো খাওয়ানো উচিত নয় বিস্তারিত
- বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে সর্তকতা অবলম্বন
- সর্বশেষ কথা
বাচ্চাদের ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হলে কি কি খাবার খাওয়ানো উচিতঃ
বাচ্চাদের ঠান্ডা বা সর্দি-কাশি হলে আপনারা অনেকেই চিন্তিত হয়ে পড়েন।
কিন্তু এখন বাচ্চাদের ঠান্ডা সর্দি কাশি হলে আপনারা কি খাবেন এবং কি খাওয়াবেন না
এই সমস্ত বিষয় নিয়ে এ পোষ্টের মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে তাহলে চলুন জেনে আসা যাক
বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি কি খাবার খাওয়ানো উচিত।
বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে যে খাবারগুলো খাওয়াতে হবেঃ
- বুকের দুধ
- ভিটামিন সি যুক্ত ফল ও সবজি
- টমেটো
- গাজর
- ডালিম
- আপেল
- মুগ ডাল
- মিষ্টি আলু
- সাবু দানা
- ব্রকলি
- ভাতের মাড়
বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে যে খাবারগুলো খাওয়াতে হবে বিস্তারিত
বুকের দুধঃ
বাচ্চাদের ঠান্ডা সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য খাদ্য তালিকা প্রথমে রাখা হয়েছে মায়ের বুকের দুধকে। যেসব বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগে তাদেরকে ঘনঘন মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত মায়ের বুকের দুধ খেলে একটি শিশুর দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
ভিটামিন সি যুক্ত ফল ও সবজিঃ
ভিটামিন সি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং অবশ্যই দরকারী আমাদের শরীর
সরাসরিভাবে ভিটামিন সংশ্লেষণ করতে পারে না তাই আমাদের ভিটামিন সি যুক্ত খাবার
খেয়ে ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে হয় টকজাতীয় ফল বা প্রচুর পরিমাণে শাকসবজিতে
ভিটামিন সি পাওয়া যায় ভিটামিন সি এবং শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদন করতে সাহায্য করে
ভিটামিন সি ধারণকারী সব ধরনের ফল এবং সবজি খাওয়াতে হবে কি কি ফল এবং সবজি
টমেটোঃ
টমেটোর স্যুপ সব বয়সী মানুষেরই পছন্দ। এটি ভিটামিন সি এর একটি সুস্থ মাত্রা গঠন
করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ৮ মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাদের কে এই
স্যুপ খেতে পারবেন।
গাজরঃ
গাজর তার ওষধি বৈশিষ্ট্যের জন্য সুপরিচিত। গাজর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে এবং ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূরে রাখতে পারে গাজর সেদ্ধ করে এবং চটকিয়ে ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য স্যুপ তৈরি করে খাওয়াতে পারেন।
ডালিমঃ
ডালিম বা ডালিমের রস। ডালিমের রসে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার সন্তানের
সর্দি-কাশি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে ছয় মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাদের সর্দি
কাশি থেকে পরিত্রান পেতে ডালিমের রস তৈরি করে খাওয়াতে পারেন।
আপেলঃ
আপেল সস বা আপেলের জুস শরীরের তরলের মাত্রা পুনরায় সরবরাহ করে বলে সর্দি-কাশি
হলে এগুলো খুবই সুবিধাজনক এগুলি সহজপাচ্য খাবার এবং শিশুকে হাইড্রেট রাখতে
সাহায্য করে।
মুগ ডালঃ
মুগ ডাল বা মুগডালের পরিচ। সর্দি কাশিতে ভোগা শিশুদের একটি স্বাস্থ্যকর এবং
উপভোগপণ্য খাদ্য এটি দুপুর এবং রাতের খাবারের সাথে দেওয়া যেতে পারে সাত মাস বা
তার বেশী বয়সী শিশুদের জন্য একটি সুস্বাদু খাবার এটি ছোটরাও উপভোগ করে খাবে।
আরো পড়ুনঃ কাঠালের বিচি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
মিষ্টি আলুঃ
মিষ্টি আলু মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উৎস এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নতি করে
মিষ্টি আলু শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে বাচ্চাকে মিষ্টি আলুর পরীচ
আকারেও খাওয়াতে পারেন এবং চটকে ভর্তা বানিয়েও খাওয়াতে পারেন।
সাবু দানাঃ
সাবু নামে পরিচিত এটি আপনার সন্তানকে শক্তির একটি ভালো মাত্রা দিতে পারে হজম করা
সহজ শিশু অসুস্থ হলে তার এটা একটি পছন্দসই খাবার হতে পারে আপনি সাবুদানা দিয়ে
বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন যেমন ধরুন সাবুর পায়েস ও
সাবুর পরিচ এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে সাবুর খিচুড়ি রান্না করে খাওয়াতে
পারেন।
ব্রকলিঃ
ব্রকলি এন্টিঅক্সিডেন্টের ভরপুর ব্রকলি সংক্রমনের সাথে লড়াই করার জন্য একটি ভালো
খাবার এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এবং ৮ মাসের
বেশি বয়সী শিশুদের উপযোগী একটি খাবার অথবা ব্রোকলি সুপ বা পরিচ বানিয়ে বাচ্চাকে
খাওয়াতে পারেন।
ভাতের মাড়ঃ
ভাতের মাড় ৬ মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাদের জন্য ভাতের মাড় সর্দি কাশির জন্য একটি দুর্দান্ত ঘরোয়া প্রতিকার ভাতের মাড় বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোধে সাহায্য করে। এমনকি এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
বাচ্চাদের ঠান্ডা বা সর্দি কাশি হলে যেসব খাবার খাওয়ানো উচিত নয়ঃ
বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে এমন কিছু খাবার রয়েছে যা শিশুদের সর্দি কাশি হলে এড়িয়ে যাওয়া উচিত কারন কিছু ফল এবং সবজির একটি শীতল প্রভাব রয়েছে যার কারণে শ্বাস যন্ত্রের বা ফুসফুসের সংক্রমণ আরো বাড়িয়ে তোলে । তাহলে চলুন বাচ্চাদের ঠান্ডা সর্দি কাশি হলে কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত নয় সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ ১৫টি দেশী ফলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে যে খাবারগুলো খাওয়ানো উচিত নয়ঃ
- গরুর দুধ
- দই
- কিছু ফল
- কিছু সবজি
- প্রচুর মসলা ও তেলযুক্ত খাবার
- মিষ্টি জাতীয় খাদ্য
বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে যে খাবারগুলো খাওয়ানো উচিত নয় বিস্তারিত
গরুর দুধঃ গরুর দুধ ভীষণ উত্তেজক বলে বিশ্বাস করা হয় তাই বাচ্চার অসুস্থতার সময় যে পরিমাণে দুধ খাওয়ান তা কমিয়ে দিতে পারেন বা বন্ধ করে দিতে পারেন বাচ্চাকে সরাসরি গরুর দুধ দেওয়ার পরিবর্তে দুগ্ধজাত খাবার তৈরি করে দিতে পারেন।
দইঃ দই শরীরের উপর শীতল প্রভাব ফেলে তাই সর্দি-কাশি হলে দই এড়িয়ে
চলা উচিত।
আরো পড়ুনঃ ঠান্ডায় সর্দি-জ্বর থেকে বাঁচার উপায়
কিছু ফলঃ যখন আপনার সন্তানের গলায় সংক্রমণ হয় তখন আঙ্গুর,কলা, লিচু, তরমুজ, নরম নারকেল, ডাব এর মত কিছু ফল এড়িয়ে যাওয়া উচিত কারণ এই ফলগুলো একটু ঠান্ডা থাকে যার কারণে
গলার কফ আরো বেড়ে যায় ।
কিছু সবজিঃ কিছু সবজি যেমন শসা, উচ্ছে, করলা এবং কুমড়োর মতন সবজি ১ বছরের কম বয়সের শিশুদের জন্য উপযোগী নয় তার প্রাথমিক কারণ হচ্ছে এগুলো শরীর শীতল প্রভাব ফেলে বাচ্চাদের কাশির পরিত্রান পেতে সবজি গুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
প্রচুর মসলা ও তেলযুক্ত খাবারঃ প্রচুর মসলাযুক্ত অথবা প্রচুর
পরিমাণে তেলযুক্ত খাবার গলায় জ্বালা তৈরি করতে পারে এবং আপনার সন্তানের
সর্দি-কাশি কে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
মিষ্টি জাতীয় খাদ্যঃ মিষ্টিজাতীয় খাদ্য যেমন চকলেট ক্যান্ডি মিষ্টি এ সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে রক্তের হোয়াইট ব্লাড সেল তৈরীর গতি কমিয়ে দেয় এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় যার ফলে খুব সহজে সংক্রমণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে সর্তকতা অবলম্বনঃ
বাচ্চার সর্দি কাশি হলে কখন আমাদের সতর্ক হতে হবে সাধারণত যত্ন পুষ্টি বজায় রাখলে এই সমস্যার 7 থেকে 10 দিনের মধ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি জটিল হয়ে যেতে পারে তাই আমাদের বেশকিছু দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
যেমন শিশু যদি ঘন ঘন শ্বাস নিতে থাকে নিঃশ্বাসের সঙ্গে পাঁজর ভেতরের দিকে দেবে
যায় শিশু খাওয়া বন্ধ করে দেয় ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে খিঁচুনি হয় বা জর অনেক বেড়ে
যায় বা দীর্ঘস্থায়ী হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে
হবে।
সর্বশেষ কথাঃ
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনারা এতক্ষন আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি খাওয়ানো উচিত আর কি খাওয়া উচিত নয় জেনে নিন এই পোস্ট টি আপনার পড়েছেন এই পোস্টের মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কোন খাবারগুলো খাওয়াবেন আর কোনগুলো খাওয়াবেন না ইত্যাদি সুতরাং আমার এই পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের মাঝে শেয়ার করতে পারেন এবং এমন আরো নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমার ওয়েবসাইটে পাশে থাকুন সেইসাথে এই পোস্ট বিষয়ক আরও কোন তথ্য আপনাদের জানা থাকলে বা আমাকে জানানোর থাকলে আপনারা নিচের কমেন্ট বক্সে গিয়ে আমাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।
বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url