খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আমরা অনেকেই খেজুরের গুড় খেতে ভালোবাসি খেজুরের গুড় দিয়ে আমরা অনেক পিঠা পুলি খেয়ে থাকি কিন্তু আমরা আদৌ জানিনা যে খেজুরের গুড়ে কি পরিমান উপকার রয়েছে তাহলে আপনাদের খেজুরের উপকারিতাও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হলে পুরো পোস্টটি পড়তে হবে চলুন তাহলে আমরা খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ এক নজরে দেখে নিন
- খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান
- খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা
- খাটি খেজুরের গুড়/খাঁটি খেজুরের গুড় চেনার উপায়
- খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা
- খেজুরের গুড় এর ইংরেজি
- খেজুরের গুড় কিভাবে তৈরি করে
- মন্তব্য
খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান
আমরা অনেকেই শীতকালীন সময়ে বিভিন্ন পিঠাপুলি তৈরিতে খেজুরের গুড় ব্যবহার করে
থাকে সুতরাং সেই অর্থে আমাদের খেজুরের গুড় প্রিয়। আমরা শীতকালীন সময়ে পিঠাগুলি
তৈরিতে খেজুরের গুড় ঠিকই খেয়ে থাকে কিন্তু আদৌ আমরা জানি না যে আসলে কি খেজুরের
গুড়ের মধ্যে এমন কোন উপাদান আছে যা আমাদের দেহের পুষ্টি তৈরিতে সাহায্য করে।
চলুন তাহলে খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ সকালে খেজুর খাওয়ার ১০ টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
খেজুরের গুড় রয়েছে প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরের গুড়ের মধ্যে ১.৬ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৩ গ্রাম ফ্যাট সেইসাথে ২.৫ গ্রাম আঁশ রয়েছে এবং সেইসাথে ৮৭ গ্রাম এর মত কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এবং সেইসাথে খেজুর গুড়ে বিভিন্ন রকমের ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে খেজুরের গুড়ি যা আমাদের দেহের বিভিন্ন পুষ্টি সাধনে সহায়তা করে থাকে।
খেজুরের গুড়ের উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা সকলেই গুড় খেতে বা গুড় দিয়ে পিঠা তৈরি করে খেতে আমরা খুবই পছন্দ করি
কিন্তু আমরা আদৌ সকলে জানিনা যে গুড় খেলে আমাদের উপকারিতা গুলো কি এবং আমাদের
গুড় খেলে অপকারিতা গুলো কি তাহলে চলুন খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে
জেনে নেওয়া যাক।
খেজুর গুড়ের উপকারিতাঃ
- খেজুরের গুড় আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
- খেজুরের গুড় আমাদের দেহের কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করতে সাহায্য করে
- আমাদের শরীরে আয়রনের অভাব ঘটলে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি হয় সুতরাং খেজুরের গুড়ে আয়রন রয়েছে তাই খেজুরের গুড় খেলে আমাদের দেহে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।
- গুড় আমাদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে যেন আমাদের দেহে সর্দি-কাশি ইত্যাদি এসকল রোগ ব্যাধি বসানো রাখতে পারে।
- খেজুরের গুড় আমাদের ত্বকের জন্যেও বেশি উপকারী।
- এবং সেইসাথে খেজুরের গুড় আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
খেজুরের গুড়ের অপকারিতাঃ
- হজমের সমস্যা যারা গুড তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে সেই গুড়গুলোই আপনারা খান সেগুলো আপনাদের বিপাকক্রিয়াই বাধা সৃষ্টি করে হজমের সমস্যা ঘটায়। তাই সদ্য তৈরি কর গুড় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- আবার যাদের দেহের ওজন বেশি তারা গুড়ে যতই উপকারে থাক না কেন তা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কেননা ১০০ গ্রাম গুড় ৩৮০ ক্যালোরি রয়েছে তাই যাদের শারীরিক স্থূলতা বেশি রয়েছে তারা গুড় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- প্রচন্ড গরমের দিনে গুড় না খাওয়াই উত্তম কেননা গরমে গুড় খেলে আপনার নাক দিয়ে রক্তক্ষরণের সৃষ্টি হতে পারে।
- আবার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা মতে মাছ আর গুড় কখনো একসাথে খাওয়া উচিত নয় কেননা এটি পরিপাকতন্ত্রে যাদের আলসারের সমস্যা আছে তাদের সেই সমস্যাটি বেড়ে যেতে পারে তাই মাছ আর গুড় একসঙ্গে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
খাটি খেজুরের গুড়/খাঁটি খেজুরের গুড় চেনার উপায়
- আমরা অনেকেই বাজার থেকে গুড় কিনি কিন্তু আমরা জানি না যে এই গুড় গুলো আসলে ভালো মানের গুড় বা খাঁটি গুড় না ভেজাল গুড়। তাহলে চলুন খাঁটিগুড় চেনার কয়েকটি পদ্ধতি জেনে নিই।
- আপনি যখন বাজারে গুড় কিনতে যাবেন তখন প্রয়োজনে দোকানদারের কাছ থেকে একটু গুড় ভেঙে নিয়ে চেখে দেখবেন সেটি লোনটা না মিষ্টি। যদি লোনটা হয় তাহলে বুঝবেন এটি অনেকদিন আগের গুড় এবং এটি খাঁটি নয়।
- প্রয়োজন হলে আপনি দোকানের কাছ থেকে একটু গুড় নিয়ে দুই আঙ্গুল দিয়ে চেপে দেখবেন যদি সেটি নরম হয় তাহলে বুঝবেন এটি ভালো মানের গুড় বা খাটি গুড়।
- সাধারণত খাঁটি গুড়গুলো দেখতে বাদামি রঙের হয়। কিন্তু যখনই আপনি দেখবেন যে বাজারে বিকৃত গুড় গুলো হলদেটে ধরনের ভাব নিয়েছে তখনই আপনি বুঝবেন যে এতে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক মিশানো হয়েছে।
- আবার অনেক সময় খেজুরের গুড় গুলো চেখে দেখলে যদি তিতকুতে হয় তাহলে বুঝবেন যে এই গুড়টি অনেকক্ষণ ধরে জাল দেওয়া হয়েছে যার ফলে এটি তিতকুতে ভাব নিয়েছে তাই এই গুড়টি আপনাদের না কেনাই ভালো।
খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা
খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কয়েকটি জেলা রয়েছে তার তালিকা গুলো নিচে দেওয়া
হলঃ
- যশোর-খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত
- ফরিদপুর-খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত
- মাদারীপুর-খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত
- মানিকগঞ্জ-খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত
- রাজবাড়ি -খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত
- নড়াইল-খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত
খেজুরের গুড় এর ইংরেজি
খেজুরের গুড়-Date molasses
খেজুরের গুড় কিভাবে তৈরি করে
সাধারণত খেজুরের গুড় তৈরির চাষীরা যেভাবে খেজুরের গুড় তৈরি করেন তা নিচে
বিস্তারিত দেওয়া হলোঃ
প্রথমে গাছীরা গাছে একটি পাত্র ঝুলিয়ে রাখে তাতে প্রচুর পরিমাণে খেজুরের রস জমা
হয় বিশেষ করে গাছীরা এই পাত্রটি ঝুলিয়ে রাখেন সন্ধ্যার দিকে। এবং দ্বিতীয়
পর্যায়ে তারা অতি সকাল সকাল সেই পাত্রগুলিকে নামিয়ে নেন এবং তাতে যে পরিমাণ রস
সংগ্রহ হয় সেই রসগুলো তারা বাসায় নিয়ে গিয়ে চুলায় অনেকক্ষণ ধরে জাল দেন
প্রায় দুই থেকে তিন ঘন্টা।
আরো পড়ুনঃ ঘি খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
এবং তারপরে সেই খেজুরের রস গুলো রস থেকে হয়ে যায় খেজুরের লালি যখন সে খেজুরের
রস গুলো খেজুরের লালি হয় তখন খেজুরের গুড়ের চাষীরা চুলা থেকে নামিয়ে নেন এবং
তা অন্য একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে প্রায় আধা ঘন্টার মত ঠান্ডা করা হয় ঠান্ডা করার
পরে সেই খেজুরের লালিগুলো একটু গোটা গোটা ভাব ধারণ করে যাকে বলা হয় বীজ এবং সেই
বীজগুলো আস্তে আস্তে শক্ত করে তৈরি করা হয় খেজুরের গুড় যা পরবর্তী পর্যায়ে
বাজারজাত করা হয়।
মন্তব্যঃ
সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনারা খেজুর গুড়ের উপকারিতা অপকারিতা এবং খেজুরের গুড় খাঁটি না ভেজাল ইত্যাদি সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন যদি এই পোস্টটি আপনাদের পড়ে ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করে দিন এবং এমন আরো পোস্ট পেতে আমার ওয়েবসাইটের পাশে থাকুন। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url