ব্লাড ক্যান্সার প্রাথমিক লক্ষণ ও তার প্রতিকার

  

সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ আজ আপনাদের সামনে ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয় ব্লাড ক্যান্সার হলে মানুষ কত দিন বাঁচে এবং ব্লাড ক্যান্সার থেকে পরিত্রান পাওয়ার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। এবং ব্লাড ক্যান্সার সম্পর্কে জানতে হলে আমার এই পুরো পোস্টটি আপনাদের মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে তাই আরো দেরি না করে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

ব্লাড ক্যান্সার

পোস্ট সূচিপত্রঃ এক নজরে দেখে নিন

ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ

ব্লাড ক্যান্সার মূলত এক ধরনের রক্তের মধ্যে প্রবাহিত ক্যান্সার। সুতরাং আমরা অনেকেই এই ক্যান্সার সম্পর্কে অবগত নন এ চলুন ব্লাড ক্যান্সার হলে তার কিছু লক্ষণ একটি মানবদেহে প্রকাশ পাবে তো সেই ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ গুলো কি কি নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

  • অনেক সময় দীর্ঘদিন ধরে শরীরে জ্বর থাকে জ্বর ভালো হচ্ছে না এবং ঘন ঘন জ্বর হয়
  • ব্লাড ক্যান্সারের জন্য মানবদেহের লোহিত রক্ত কণিকা কমে যায় এবং সেই লোহিত রক্ত কণিকার ঘাটটির ফলে দেহে অস্বাভাবিক ইনফেকশন বা জ্বর এর ঘাটটিতে রক্তক্ষরণ হতে থাকে
  • দেহের বিভিন্ন অংশে ব্লাড ক্যান্সারের ফলে দেহের দ্রুত রক্ত কণিকা বৃদ্ধি হওয়ার মত জায়গা পায় না বলে দেহে রক্তস্বল্পতা ঘাটতি দেখা দেয় এবং দেহের বিভিন্ন অংশে প্রচুর পরিমাণে ব্যথা অনুভূতি হয়
  • আবার দাঁতের গোড়া প্রস্রাব পায়খানা অনেক সময় কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া ইত্যাদি এই সমস্ত বিষয়গুলো ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ গুলোর ভেতরে অন্যতম।
  • রাতে প্রচুর পরিমাণে ঘামা ও মাথা ঘোরা
  • আবার শরীরের শারীরিক ওজন কমে যাওয়া
  • ব্লাড ক্যান্সারের প্রভাবে মুখ গলা ও ত্বকের এবং ফুসফুসে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেওয়া।

ব্লাড ক্যান্সার প্রাথমিক লক্ষণ

আমরা উপরে দেখতে পেয়েছি ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণগুলো কিন্তু অনেক সময় ব্লাড ক্যান্সারের কিছু প্রাথমিক লক্ষণও রয়েছে সেগুলো নিচে সব বিস্তার আলোচনা করা হলো।

  • রক্তস্বল্পতার জন্য শারীরিক দুর্বলতাঃ ব্লাড ক্যান্সার হলে যেহেতু শরীরে ক্যান্সার সেলগুলো বেড়ে গিয়ে শরীরে লোহিত রক্তকণিকা গুলো উৎপন্ন করতে পারেনা সেই জন্য রোগী প্রথমে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আস্তে আস্তে ক্যান্সার বৃদ্ধি পেল পায়ু পথের মাধ্যমে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।
  • খাবারে অরুচি বা মন্দা ভাবঃ ব্লাড ক্যান্সারের রোগীগুলো সাধারণত খাবারের অরুচি তা দেখা দেয় তাদের খাবার খেতে ভালো লাগে না।
  • অতিরিক্ত বুক ধরফর করাঃ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী যদি একটু বেশি হাঁটাহাঁটি করে তাহলে তার বুক ধরফর করতে শুরু করবে তাই এটি ব্লাড ক্যান্সারের একটি অন্যতম কারণ।
  • ফ্যাকাসে বর্ণ ধারণ করাঃ ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর দেহে যেহেতু লোহিত রক্ত কণিকার সৃষ্ট হতে পারে না সেহেতু ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চেহারা ফ্যাকাসে বর্ণ দেখা যায়। তাই ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চেহারা ফ্যাকাসে বর্ণ দেখা দিলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয়/ব্লাড ক্যান্সার কি ভালো হয়

মানবদেহে ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয় এবং ব্লাড ক্যান্সার কি ভালো হয় এই বিষয় নিয়ে নিচে আলোচনা করা হবে তাই আপনাদেরকে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।

মানুষের শরীরে যেহেতু রক্ত মাংসের মাধ্যমে গড়ে ওঠা তাই রক্ত সাধারণত মানব দেহের অস্থিমজ্জার মধ্যে তৈরি হয় এবং এই অস্থিমজ্জার ভেতরে রক্ত তৈরি হয়ে পুরো মানব শরীরে শিরা উপশিরার মাধ্যম দিয়ে পুরো মানবদেহে প্রবাহিত হয়ে থাকে। রক্তের মধ্যে প্রধানত তিন ধরনের কণিকা না পাওয়া যায়।

  • রেড ব্লাড সেল বা লোহিত রক্তকণিকা
  • হোয়াইট ব্লাড সেল বা শ্বেত রক্তকণিকা
  • এবং প্লেটলেট বা অনুচক্রিকা

ব্লাড ক্যান্সার হল মানবদেহে হোয়াইট ব্লাড সেল বা শ্বেত রক্তকণিকার অসামভাবিক বৃদ্ধি। সুতরাং মানবদেহে যেহেতু লোহিত রক্ত কণিকার পরিবর্তে শ্বেত রক্ত কণিকার পরিমাণ বেড়ে যায় সেহেতু একজন রোগী রক্তশূন্যতায় ভোগে। এবং তার দেহে বিভিন্ন অস্থিমজ্জার ভেতরে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা সৃষ্ট অনুভব হতে থাকে। ফলে মানবদেহে যতটুকু রক্তর প্রয়োজন তা মানবদেহে উৎপন্ন হয় না।

আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত

ব্লাড ক্যান্সার কি ভালো হয়ঃ ব্লাড ক্যান্সার যেহেতু রক্তের প্রভাবিত এক ধরনের বিশেষ রোল তাই এই রোগটি যথাযথ পর্যায়ে যাওয়ার আগে যদি উপরের দেওয়া লক্ষণগুলো যদি শরীরে দেখা দেয় এবং সে অনুযায়ী অতি দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে যদি সঠিক পর্যায়ে চিকিৎসা নেওয়া যায় তাহলে অবশ্যই ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্লাড ক্যান্সার হলে মানুষ কত দিন বাঁচে

ব্লাড ক্যান্সার হলে মানুষ কত দিন বাঁচে সে বিষয় নিয়ে এখন আপনাদের সামনে আলোচনা করা হবে।

ব্লাড ক্যান্সার যেহেতু একটি রক্ত বাহিত রোগ সেহেতু এখানে ধর্মীয় বিষয়ও উপলক্ষণ দেখা যায় যেহেতু আমাদের সৃষ্টি করেছেন আল্লাহু সেহেতু আমাদের কে রোগ কে সৃষ্টি করেছেন ঠিক তিনি কিন্তু আমরা ক্রমান্বয়ে সুস্থ হওয়ার জন্য ডাক্তারের বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় কিন্তু তারা আমাদের শারীরিক অবস্থার দিক দিয়ে বিবেচনা করে ঔষধ পথ্য দিয়ে তারা বলে দিয়ে হয়তোবা একটা নির্দিষ্ট সময় দেয়।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের সর্দি কাশি হলে কি খাওয়ানো উচিত আর কি উচিত নয় জেনে নিন

কিন্তু তারা অতি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারেনা নিয়ে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী যে কতদিন বাঁচবে অনেক সময় দেখা যায় তারা এক মাস দুই মাস অথবা তিন মাস সময় দেয় কিন্তু দেখা যায় যে সঠিক চিকিৎসার ফলে এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে কয়েক বছরও মানুষ বেঁচে যায়।

ব্লাড ক্যান্সার কিভাবে হয়

ব্লাড ক্যান্সার হওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে চলুন কারণগুলো জেনে নেওয়া যাক এবং তা থেকে বিরত থাকতে হবে।

  • বিভিন্ন অনিরাপদ খাদ্যঃ বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাতকৃত খাদ্য। যেমন নানা ধরনের সৌখিন পটেটো ইত্যাদি আর বিভিন্ন ধরনের খাদ্য খাবার এসব বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক রং মিশ্রণ করে থাকে। এই সমস্ত রং বা রাসায়নিক দ্রব্যের ফলে মানবদেহে ব্লাড ক্যান্সারের মতো বিভিন্ন ধরনের ব্যাধি তৈরি হতে পারে
  • মেয়াদ উত্তীণূকৃত খাদ্যঃ অনেক সময় আমরা আমাদের ফ্রিজে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য কিনে রেখে দিই কিন্তু আমরা যখন সেগুলো খেয়ে থাকি তখন আমরা খেয়াল করি না যে আদৌ এগুলো মেয়াদ আছে না নেই। যদি বেশিদিন এর এই সমস্ত খাবারগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায় এবং তার ফলেও আমরা পেয়ে থাকি তো আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধতে পারে।
  • বংশগত কারণঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় বংশগত কারণেও বিভিন্ন ব্যক্তিদের ক্যান্সারের মতো ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।
  • নেশা দ্রব্য গ্রহণঃ আমাদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি সিগারেট, মদ ইত্যাদি ও বিভিন্ন রকমের নেশা দ্রব্য সেবন করে থাকে এতেও ক্যান্সারের সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে বা প্রথমে আমাদের জানতে হবে যে কিসের কারণে আমাদের দেহে ব্লাড ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব ঘটে ব্লাড ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে আপনাদের জানা থাকলে তবে আপনারা ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ ডায়রিয়া রোগের লক্ষণ ও তার প্রতিকার

  • সুষম খাবার গ্রহণঃ আমাদের বিভিন্ন ধরনের অনিরপদ খাদ্য যেমন প্যাকেটজাতকরণ খাদ্য তালিকা এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে এবং আমাদের সুষম খাবার গ্রহণ করতে হবে এতে ব্লাড ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের রুবানী থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
  • শাকসবজি বেশি বেশি খাওয়াঃ আমাদের সবসময়ই সবুজ শাকসবজির খাওয়ার প্রতি যত্নশীল হতে হবে সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এগুলো আমাদের দেহের কোষ্ঠকাঠিন্যতা দূর করে।
  • নিয়মিত ঘুমঃ আমাদের নিয়মিত ঘুমানো উচিত কেননা পরিমিত ঘুম যদি না হয় তাহলে দেহের প্রতি ঝুঁকি আরো বেড়ে যায় এবং তার ফলে ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের মরণব্যাধি হতে পারে।

ব্লাড ক্যান্সার কত প্রকার

ব্লাড ক্যান্সার মূলত তিন প্রকার কিন্তু এর আবার বিভিন্ন ধরনের শ্রেণীবিন্যাস রয়েছে।

১।হোয়াইট ব্লাড ক্যান্সার থেকে সৃষ্ট ক্যান্সার কে বলা হয় লিউকেমিয়া ব্লাড ক্যান্সার এই ক্যান্সার তিন ধরনের হয়ে থাকে।

  • একিউট মাইলোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া
  • একিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া
  • একিউট লিঙ্কোসাইটিক লিউকেমিয়া

২। লসিকা গ্রন্থি থেকে সৃষ্ট ব্লাড ক্যান্সারকে বলা হয় লিম্ফোমা। সাধারণত এই ধরনের ব্লাড ক্যান্সার আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে।

  • হজকিন ও ননহজকিন লিম্ফোমা
  • লিম্ফোব্লাস্টিক লিম্ফোমা

ব্লাড ক্যান্সার নিয়ে শেষ কথাঃ

সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ আপনাদের সামনে ব্লাড ক্যান্সার প্রাথমিক লক্ষণ ব্লাড ক্যান্সার হলে মানুষ কত দিন বাঁচে ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় ও তার প্রতিকার ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আপনাদের সামনে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছি যদি ব্লাড ক্যান্সার সম্পর্কে আপনাদের আরো কিছু জানার থাকে তবে আমাকে নিজে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আশা করি আপনারা আমার এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হয়েছেন সুতরাং আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বন্ধুমহল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url